শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বেগম খালেদা জিয়া’র সাথে প্রধান উপদেষ্টার কুশল বিনিময় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৬০তম জন্মদিন কাটলো নীরবে শিক্ষার্থী-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের নামে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হবে: তারেক রহমান নিত্য পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি : ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরোদবাদক ওস্তাদ আশীষ খাঁ মারা গেছেন শহীদদের নামে হবে দুই শতাধিক স্টেডিয়াম: আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া মানুষের জন্য লাভজনক এমন অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ২০২৫ সাল নাগাদ সরকারি নির্মাণে পোড়া ইট ব্যবহার বন্ধ হবে : সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ -আইন মন্ত্রণালয়ে ১০০ দিনে গৃহীত কার্যক্রম সরকারি আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ব্রাজিলের সেকেন্ড লেডির বৈঠক ফ্যাসিবাদের গাছ কেটেছি, শিকড় উপড়ে ফেলতে প্রয়োজনে আমৃত্যু লড়াই করবো : আসিফ মাহমুদ গণমাধ্যমের ওপর সরকারের কোনো চাপ নেই : নাহিদ ইসলাম আজ উদীয়মান কণ্ঠশিল্পী সালমান রাজের জন্মদিন কপ-২৯ সম্মেলনে যোগ দিতে আজারবাইজান যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা বর্তমান সরকারের বৈধতা হলো গণঅভ্যুত্থান : আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিলেন আরো তিনজন বাতিল নয় স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের প্রক্রিয়া চলছে : টিসিবির মুখপাত্র বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করবে : তারেক রহমান গণতন্ত্র বিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্র থেমে নেই : তারেক রহমান ইসরাইল হামলা করলো লেবাননে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন হলে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা সম্ভব : মির্জা ফখরুল  বিপ্লবের মাধ্যমে ছাত্র-শিক্ষকেরা চিন্তার স্বাধীনতা, মুক্তবুদ্ধির চর্চা ফিরে পেয়েছেন : অধ্যাপক ইউনূস গুম সংক্রান্ত কমিশনে ১,৬০০’র বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে পরিকল্পনা কমিশন গঠন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছয় সংস্কার কমিশন প্রধানের বৈঠক বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি’র নাটকের প্রদর্শনী বন্ধের কারণ জানালেন ডিজি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে ২২ নভেম্বর ঢাকায় আসছে আয়ারল্যান্ড নারী দল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আসিয়ানের সদস্য পদ পেতে ইন্দোনেশিয়ার সমর্থন চান নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে নাম চেয়েছে সার্চ কমিটি

মারাত্মক রূপ নিচ্ছে ডেঙ্গু

স্বাধীনতা২৪.কম
  • Update Date : শুক্রবার, ৩০ জুলাই, ২০২১

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু সংক্রমণ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার এই সময়টাতে ডেঙ্গুর সংক্রমণ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা না গেলে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে হুঁশিয়ার করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, পরিস্থিতি এমন হতে পারে, যা হয়তো স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পক্ষে সামাল দেয়াটাও কঠিন হয়ে পড়বে। "দুটো মহামারি যদি একত্রে চলমান থাকে, তাহলে মানুষের জীবনের জন্য একটি প্রবল হুমকি হয়ে দাঁড়াবে," ড. লেনিন চৌধুরী বলেন।

 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার এন্ড কন্ট্রোল রুম থেকে দেয়া তথ্য বলছে, কয়েক দিন ধরেই ডেঙ্গু সংক্রমণের সংখ্যা শতাধিক হচ্ছে।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, শুধু জুলাই মাসেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ১,৯২০জন, যা ২০২০ সালে সারা বছর জুড়ে আক্রান্ত সংখ্যার চেয়েও বেশি।

রাজধানী ঢাকার একটি পরিবারের সাথে কথা বলে বোঝা গেল পরিস্থিতি কতটা ভয়ানক হয়ে উঠছে।সরকারি চাকরিজীবী রাজিয়া সুলতানা। বৃহস্পতিবার দুপুরে যখন তার সাথে কথা হচ্ছিল তখন তিনি হাসপাতালে গিয়েছেন চিকিৎসাধীন ছেলের পরিচর্যার করতে।

রাজিয়া সুলতানা জানাচ্ছিলেন, কয়েক দিন আগেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তার এক ছেলে মারা গেছে।আর এখন একই রোগে আক্রান্ত হয়ে আরেক জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার এই ছেলের অবস্থা কিছুটা ভাল হওয়ার পথে। ঈদের তৃতীয় দিন ও (তার ছেলে) অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরীক্ষা করানোর পর পজিটিভ আসলে আমরা একটি হাসপাতালে ভর্তি করি। 'অবস্থা খারাপ হলে অন্য হাসপাতালে নেই। সেখানেও অবস্থা আরো খারাপ হয়। দু'দিনের দিন মারা যায়, বলেন তিনি।

ডেঙ্গু সংক্রমণের হার বেশি কেন?

দু'হাজার কুড়ি সালে ১,৪০৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন, আর চলতি বছরের প্রথম সাত মাসেই ২,২৯২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান বলেন, এবছর যে ডেঙ্গু সংক্রমণ বেশি হবে তা তারা আগেই সন্দেহ করেছিলেন।

তিনি বলেন, এর কারণ হচ্ছে, ভাইরাসজনিত রোগের ক্ষেত্রে প্রতি এক বছর অন্তর সংক্রমণের সংখ্যা বেশি হয়।

"দু'হাজার কুড়ি সালে যেহেতু ডেঙ্গুর সংক্রমণ কম ছিল, তাই এবছর বেশি হবে, সেটা আমাদের আশঙ্কা ছিল," বলেন তিনি।

সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু সংক্রমণ হয়েছিল ২০১৯ সালে।

সেবছর এক লাখের বেশি মানুষ রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর মারা গিয়েছিলেন ১৭৫ জনের বেশি।

তবে বেসরকারিভাবে মৃতর সংখ্যা আরো অনেক বেশি বলে ধরা হয়।

ডেঙ্গু রোগীরা কেন হুমকীর মুখে?

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, এখন যেহেতু করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার উর্ধ্বমুখী, চারপাশে অনেক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, তাই কারো জ্বর আসলেই ধরে নেয়া হয় যে তার কোভিড হয়েছে।

তিনি জানান, কোভিড আর ডেঙ্গু-দুই ক্ষেত্রেই জ্বরের উপসর্গটি সাধারণ হওয়ার কারণে এই সমস্যাটি হচ্ছে।

এছাড়া ডেঙ্গু রোগের পরীক্ষার ফল আসতেও কিছুটা সময় লেগে যায়। যার কারণে ডেঙ্গু রোগীদের জটিলতা বেশি হচ্ছে এবং তাদের তখন হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়।

অন্যদিকে কোভিডের কারণে হাসপাতালে শয্যা পাওয়া যাচ্ছে না, কারণ কোন শয্যা খালি থাকছে না।

"ফলে কী দাঁড়াচ্ছে, আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা থেকে অনেকটাই অবহেলিত ও বঞ্চিত।"

তিনি বলেন, "দুটো মহামারি যদি একত্রে চলমান থাকে, তাহলে মানুষের জীবনের জন্য একটি প্রবল হুমকি হয়ে যাবে, এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কখনোই এই চাপ নিতে সক্ষম হবে না।"

হাসপাতালে জায়গা পাওয়া কষ্টকর

ড. চৌধুরীর বক্তব্যর প্রতিফলন পাওয়া গেল ঢাকার আরেকটি পরিবারের সাথে কথা বলে।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পর সম্প্রতি সেরে উঠেছেন মেহনাজ হোসেইন অনন্যার মা। তবে কোভিড পরিস্থিতির কারণে হাসপাতালে ভর্তি করাতেও বেশ বেগ পেতে হয়েছিল তাদের।

"হাসপাতালে ভর্তি করানোর আগে প্রচুর হাসপাতাল ঘাটাঘাটি করি। পরিচিতদের মাধ্যমে ভর্তি করানোর চেষ্টা করি কিন্তু পাচ্ছিলাম না,'' মিস হোসেইন বলেন।

''পরে একটি হাসপাতালে সিট পেয়ে ভর্তি করাই।"

হোসেন জানান, শুরুতে শুধু জ্বর থাকলেও পরে শরীর ব্যথাসহ আরো কিছু উপসর্গ বেড়ে গেলে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় তার মাকে।

টানা ১৪ দিন ধরে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালেই থাকতে হয়েছে তাকে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কোভিড পরিস্থিতি সামাল দিতেই অনেকটা বেগ পেতে হচ্ছে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে। সেখানে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হলে, সংক্রমণ থামানো ছাড়া আর কোন উপায় নেই। সেক্ষেত্রে পদক্ষেপ অতি দ্রুত নিতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ডা. রোবেদ আমিন বলেন, হাসপাতালের আইসিইউগুলো কোভিড রোগীদের চিকিৎসাতেই বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে ডেঙ্গু রোগীরা কিছুটা সংকটের মুখে পড়ছেন।

এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে নন-কোভিড কয়েকটি হাসপাতালগুলোকে ডেঙ্গুর জন্য নির্ধারিত করা যায় কিনা সে বিষয়ে চিন্তা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা সিটি কর্তৃপক্ষ কী বলছে?

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ৬৪২ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ৬১৮ জনই ঢাকায়।

চলতি বছরে এ পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ঢাকায় আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার ২২৫ জন। আর ঢাকার বাইরে এই সংখ্যা ৬৭ জন।

রাজধানীতে মশা নিধনের দায়িত্বে থাকা সিটি কর্পোরেশন বলছে, যেহেতু এডিস মশা পরিষ্কার পানিতে জন্মায় এবং এর উৎস বাসা-বাড়িতেই বেশি থাকে, তাই মশা নিধনে জনগণ সচেতন হয়ে পদক্ষেপ না নিলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে না।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণের দায় যেমন কর্তৃপক্ষের রয়েছে ঠিক তেমনি নাগরিকদেরও রয়েছে।

তিনি বলেন, জনসচেতনতা যদি তৈরি না হয় তাহলে মশা মারার জন্য কীটনাশকের ব্যবহার দ্বিগুণও করে দেয়া হয়, কিংবা জনবলও যদি দ্বিগুণ বা তিনগুণও করা হয় তাহলেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আসবে না।

জনসচেতনতা তৈরিতে সিটি কর্পোরেশন কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার রোগীদের মধ্যে শতকরা ৯৭ ভাগের বেশিই রাজধানী ঢাকায়। সূত্র: বিবিসি বাংলা

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *