করোনাভাইরাস থেকে শ্রমিকদের সুরক্ষিত রাখতে টিকা ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট চেয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত এবং যুক্তরাজ্যের ব্র্যান্ড মার্কস অ্যান্ড স্পেনসারের (এমঅ্যান্ডএস) বাংলাদেশ প্রধানকে চিঠি দিয়েছেন তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান।
ফারুক হাসান গত মঙ্গলবার পৃথকভাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার, ইইউ রাষ্ট্রদূত রেনসে টেরিঙ্ক এবং এমঅ্যান্ডএসের বাংলাদেশ প্রধান স্বপ্না ভৌমিককে চিঠি দেন। বিজিএমইএর নেতারা গতকাল বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিজিএমইএর সভাপতি তিনটি পৃথক চিঠি দিলেও সেগুলোর মূল কথা কাছাকাছি। তিনি লিখেছেন, করোনার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পোশাক কারখানা চালানোর কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলো সময়মতো পণ্য পেয়েছে।
তবে শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য টিকার বিকল্প নেই। ইতিমধ্যে নিবন্ধন ছাড়াই পোশাক কারখানার শ্রমিকদের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। সরকারও বিপুলসংখ্যক পোশাকশ্রমিককে টিকা দেওয়ার বিষয়ে আন্তরিক। তবে সবকিছু নির্ভর করছে টিকার প্রাপ্যতার ওপর। সে কারণে পোশাক কারখানার উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে যার যার অবস্থান থেকে টিকা ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট পাঠিয়ে সহায়তা করলে কাজটি সহজ হয়।
বিজিএমইএর সভাপতি মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলারকে বিশেষভাবে লিখেছেন, ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশকে টিকা উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে। নতুন করে যদি আরও টিকা দেওয়ার মতো সুযোগ থাকে, তাহলে পোশাক খাত ও বাংলাদেশ বিশেষভাবে উপকৃত হবে। করোনা শনাক্তের মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আইসোলেশনে রেখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটও চেয়ে অনুরোধ করেন তিনি।
এ ছাড়া ইইউ রাষ্ট্রদূত রেনসে টেরিঙ্ককে পোশাক শ্রমিকদের জন্য করোনার টিকাপ্রাপ্তিতে এবং এমঅ্যান্ডএসের বাংলাদেশ প্রধান স্বপ্না ভৌমিককে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট প্রদানে সহযোগী চেয়ে অনুরোধ করেন ফারুক হাসান।
টিকা চেয়ে সভাপতির চিঠি দেওয়ার পেছনে সরকারের চাপ আছে কি না, জানতে চাইলে সংগঠনটির সহসভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘না। আমরা নিজেদের উদ্যোগেই চিঠি দিয়েছি। কারখানার উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে টিকার বিকল্প নেই।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গাজীপুরের চারটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের গত ১৮ জুলাই করোনার প্রতিষেধক টিকাদান শুরু হয়। পোশাকশ্রমিকদের দ্রুত টিকার আওতায় আনতে নিবন্ধন ছাড়াই টিকা দেওয়া হচ্ছে। কারখানাগুলো হচ্ছে কোনাবাড়ি এলাকার তুসুকা ডেনিম, তুসুকা ওয়াশিং, গাজীপুরের লক্ষ্মীপুরা এলাকার স্পেরো অ্যাপারেলস ও ভোগরা এলাকার রোজভ্যালি গার্মেন্টস।
কারখানা খোলার দাবি নিয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সভা শেষে বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের ছুটির আগেই ৩০ হাজার শ্রমিককে টিকা দেওয়া হয়েছে।