পাথরঘাটা উপজেলার, জীনতলা, পদ্মা হরিণঘাটা, রুহিতা, কাঠালতলী, তালুক চরদুয়ানী, ভহোট পাথরঘাটা, কালমেঘা, কাকচিড়া, লেমুয়া সদ্য রোপা আমন ও বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। এছাড়া অসংখ্য মাছের ঘের, পুকুর ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে পাথরঘাটা পৌরসভার পানি নিষ্কাশন সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পানিতে তলিয়ে আছে। কিছু কিছু এলাকা প্লাবিত হয়ে ঘরবাড়ি নিমজ্জিত আছে। সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পৌরবাসীরা জলাবদ্ধতায় নাকাল হচ্ছে বছরের পর বছর।
পৌরসভার ছোটপাথরঘাটা এলাকার আব্দুল জলিল মিয়া, কামাল হোসেনসহ অনেকে জানান, ভারী বর্ষণের কারণে পানি জমে আমাদের ঘেরের পানি ডুকেছে। এখানের অনেক প্রভাবশালীদের কারণে আমরা পানিত মধ্যে থাকতে হয়। অনেকের আবার ঘের আছে তাই তারা শক্ত বাধ দিয়ে পানি আটকিয়ে রেখেছে। আমার সমস্যার কথা বললেও কোনো সমাধান হয় না। আমরা চাই শক্ত ড্রেনেজ ব্যবাস্থা করে দেয়া হোক।
পাথরঘাটা উপজেলা কৃষি ও মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় মৎস্য ঘের ৮.৯০ হেক্টর, পুকুর ও দীঘি ২৩.৭২ হেক্টর ডুবে গেছে এর মধ্যে মাছ বের হয়ে গেছে, সাদা মাছ ৪৮.৩৬ মেট্রিকটন যার মূল্য ৭২.৫৪ লাখ টাকা এবং পোনা মাছ ৪৮.৩৬ মেট্রিকটন যার মূল্য ছয় লাখ টাকা। অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে ৪০.৩০ লাখ টাকা। মৎস্য ক্ষাতে এ উপজেলায় মোট এক কোটি ১৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলায় এক হাজার চার শ’ ৬০ হেক্ট্রর জমির আমন ধানের বীজতলা আছে যার মধ্যে ৮৭৬ হেক্টর বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত আছে। সব্জি আছে ২১০ হেক্ট্রর জমিতে এর মধ্যে ৭৪ হেক্টর সব্জির গোড়া পানিতে নিমজ্জিত আছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি পানি অপসারণ করা না যায় তবে অনেক ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু জানান, হঠাৎ ভারী বর্ষণের কারণে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মৎস্য ঘেরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা সরেজমিনে পরিদর্শণ করে জেলায় তালিকা পাঠিয়েছি তাতে মোট এক কোটি ১৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিশির কুমাড় বড়াল জানান, ভারি বর্ষণে জেলার নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রোপা আমন, আউশ বীজতলা তলিয়ে ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপনের জন্য প্রাথমিক ভাবে জরিপের তালিকা জেলায় পাঠানো হয়েছে। তবে পানি যদি জমে থাকে তবে আমনের বীজতলার কিছুটা ক্ষতি হতে পারে কিন্তু আউস ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না বলেও জানান তিনি।
পাথরঘাটা উপজেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ কার্যালয়ে উপসহকারী প্রকৌশলী মো: জাহাঙ্গীর আলম জানান, ভারি বর্ষণে পাথরঘাটার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অতি বর্ষণজনিত ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপনের জন্য পৌরসভা মেয়র ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। পাথরঘাটা পৌরসভায় ১০ মেট্রিকটন ও সাতটি ইউনিয়নে ১৪ মেট্রিকটন চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। এছারাও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শুকনো খাবার ভেতর করা হয়েছে।