শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকে ঘাটে উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। এ নৌরুটে সচল নয়টি ফেরিতে কঠোর বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে পারাপার হচ্ছে শতশত যাত্রী, ব্যক্তিগত গাড়ি। শুধুমাত্র জরুরি ও বিধিনিষেধের আওতামুক্ত গাড়ি পারাপারে ফেরি চালু থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। বাংলাবাজার ঘাট থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটিতে ফেরিতে ঢাকামুখী যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। যাত্রীর চাপে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব।
এদিকে, শিমুলিয়াঘাটে পৌঁছানো ঢাকামুখী যাত্রী ও পোশাক কারখানা শ্রমিকরা পরিবহন সঙ্কটে চরম বিপাকে পড়েছেন। সড়কে পুলিশের চেকপোস্ট এড়িয়ে ছোট যানবাহনে ভেঙে ভেঙে ঢাকার পথে আসছে তারা। ফলে দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। পোশাক কারখানায় চাকরি করেন জিয়াসমিন। বাধ্য হয়ে ঢাকায় ফিরছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের গার্মেন্টস খুলছে। বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে। না গেলে চাকরি থাকবে না। রুটি-রুজি বন্ধ হয়ে যাবে।’
মিরপুরের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক হাবিব বলেন, ‘গরিবরা করোনায় মরব না, গরিব মরব না খাইয়া। গাড়ি চালু না করেই গার্মেন্টস খুলে দিল। এখন আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে। ভাড়াও বেশি লাগছে।’ মনির শেখ নামের আরেক পোশাকশ্রমিক বলেন, ‘সরকার লকডাউন দিছে, এ কেমন লকডাউন সব তো খোলা। আবার গার্মেন্টসও খুলে দিচ্ছে। এখন তো যাইতেই হবে। অফিস থেকে বারবার কল দিচ্ছে। ২০০ টাকার ভাড়া ৮০০ টাকা দিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি।’
ইকবাল হোসেন নামের আরেক যাত্রী বলেন, ‘ঈদের সময় বাড়ি গিয়েছিলাম, লকডাউনে গার্মেন্টস বন্ধ তাই বাড়িতেই ছিলাম। শুক্রবার রাতে শুনলাম- আগামীকাল থেকে গার্মেন্টস খোলা। হঠাৎ এভাবে গার্মেন্টস খোলা, এ কেমন সিদ্ধান্ত? সরকার শুধু মালিক-মহাজনের কথা শুনে। আমাদের কথা একটুও চিন্তা করে না।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের উপ-মহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নৌরুটে ছোট-বড় মিলিয়ে নয়টি ফেরি সচল রয়েছে। শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজারগামী যাত্রীর সংখ্যা কম। ঘাটে যানবাহনের উপস্থিতিও নেই। ঘাটে গাড়ির চাপ না থাকায় জরুরি প্রয়োজনে যেসব গাড়ি পারাপারের জন্য আসছে, তাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘তবে বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়াঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ খুব বেশি। বাংলাবাজার ঘাট থেকে আগত প্রতিটি ফেরিতেই চাপ রয়েছে। পোশাক কারখানা খুলছে তাই যাত্রীদের উপস্থিতি বেশি।’