পরে মাইফুল নেছা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে ভর্তি করা হয়। এমন ঘটনার খবর পেয়ে বাদাঘাট পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. শহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। গতকাল শুক্রবার রাত ৮টার দিকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদালারপাড় গ্রামে মেয়ে বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।
মাইফুল নেছার মা মমতা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট উত্তর ইউনিয়নের বাদলার পাড় গ্রামের কারী নিজাম উদ্দিনের মেয়ে মাইফুল নেছার (২৩) সঙ্গে দোয়ারাবাজার উপজেলার চৌধুরীপাড়া গ্রামের সাজিদুল মিয়ার ছেলে আবু তাহের জান্নাতের (২৮) সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী আবু তাহের জান্নাত শ্বশুরবাড়ির পার্শ্ববর্তী ভোলাখালি গ্রামের এক ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সংসার করার পাশাপাশি পাশের একটি ঘরে পোল্ট্রি মোরগের ব্যবসা শুরু করেন। যৌতুকের দাবি না মেটানোর কারণে গত মাস খানেক ধরে মাইফুলকে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন আবু তাহের। কিন্তু টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন। এর কিছু দিন আগে বিষ খাইয়ে মেরেও ফেলতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে বিচার হয়, বিচারে দোষীও হয় আবু তাহের। পরে বিচারকগণ একসপ্তাহ পর আবারও বিচারে বসবেন বলে জানায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার রাতে আমার মেয়ে বাড়িতে ওয়াশরুমে গেলে মেয়ের স্বামী, শ্বশুর ও দেবররা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে মুখ চেপে ধরে হাত, পা বেধেঁ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে পাশে ভাঙ্গার খাল নদীতে ফেলে দেন। আমার মেয়ের গুংগানির শব্দ শুনতে পেয়ে পাশের বাড়ির লোকজন নদী কিনারে পানি ও কাঁদা মধ্যে থাকা অবস্থায় বস্তার মুখ খুলে দেখে চিৎকার দিলেই সবাই জড়ো হয়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করি।’
মাইফুল নেছার বোন জামাই আশু মিয়া (২৫) ও বড় ভাই ওবায়দুল্লাহ বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই তারা আমার বোনকে নির্যাতন করছিল। যৌতুকের ৫০ হাজার টাকার দাবি মেটানোর পরও নির্যাতন বন্ধ করেনি। আজ হাত পা বেঁধে আমার বোনকে নদীতে ভাসিয়ে দিতে চেয়েছিল। আমি এর বিচার চাই।’
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আবু তাহের জান্নাত ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যাওয়া তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ তরফদার জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।