টি-টোয়েন্টিতে অষ্ট্রেলিয়াকে ২য় বার হারিয়ে বাংলাদেশ অনন্য উচ্চতায়। বাংলাদেশ সফরে পাত্তাই পাচ্ছে না বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল।
পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই খেলায় অসিদের গুঁড়িয়ে দিয়ে দাপুটে জয় পেয়েছে টাইগাররা। টানা দুই জয়ে সিরিজে ২-০তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।
বুধবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টাইগারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৭ উইকেটে ১২১ রানের বেশি করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৮ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয় পায় স্বাগতিক বাংলাদেশ।
টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২১ রান করে সফরকারীরা।
এদিন ২.৩ ওভারে দলীয় ১৩ রানে অফ স্পিনার মেহেদি হাসানের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার অ্যালেক্স ক্যারি। সাজঘরে ফেরার আগে ১১ বলে ১১ রান করার সুযোগ পান তিনি। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ইনিংসের প্রথম বলে এই ক্যারিকেই সাজঘরে ফেরান মেহেদি।
শুরুর এই ধাক্কা সামলিয়ে ওঠার আগেই অস্ট্রেলিয়া শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। ফিজের গতির বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার জশ পিলিপি। দলীয় ৩১ রানে সাজঘরে ফেরার আগে ১৪ বলে ১০ রান করার সুযোগ পান এ ওপেনার।
৩১ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর তৃতীয় উইকেটে মিসেল মার্শের সঙ্গে ৫২ বলে ৫৭ রানের জুটি গড়েন হেনরিক্স। অনবদ্য ব্যাটিং করে যাওয়া এই জুটির বিচ্ছেদ ঘটান সাকিব। ১৪.২ ওভারে দলীয় ৮৮ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরার আগে ২৫ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ৩০ রান করেন ময়েস হেনরিক্স।
প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় খেলায়ও ব্যাটিং বিপর্যয়ে লড়াই করে যান মিসেল মার্শ। প্রথম ম্যাচে নাসুম আহমেদের শিকার হওয়ার আগে ৪৫ রান করা এ তারকা ব্যাটসম্যানকে এদিনও সেই ৪৫ রানে ফেরান শরিফুল ইসলাম।
এরপর কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমানের গতির শিকার জয়ে পরপর দুই বলে সাজঘরে ফেরেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড ও অ্যাস্টন অ্যাগার।
এরপর ৩ রানের ব্যবধানে ৩ রান করে শরিফুলের দ্বিতীয় শিকার হন অ্যাস্ট টার্নার। ব্যাটসম্যানদের এই আসা-যাওয়ার মিছিলে ২০ ওভারে ১২১ রানে ইনিংস গুটায় অস্ট্রেলিয়া।
বাংলাদেশ দলের হয়ে মোস্তাফিজ নেন ৩ উইকেট, দুই উইকেট শিকার করেন তরুণ পেসার শরিফুল। একটি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান।
১২২ রানের সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে ইনিংসের ২.২ ওভারে মিচেল স্টার্কের গতির বলে বোল্ড হন সৌম্য সরকার। প্রথম ম্যাচে ২ রানে আউট হওয়া এ ওপেনার এদিন ফেরেন শূন্য রানে।
সৌম্য আউট হওয়ার ঠিক পরের ওভারের প্রথম বলে জশ হ্যাজলউডের বলে বোল্ড নাঈম শেখও। আগের ম্যাচে ৩০ রান করা নাঈম, এদিন আউট হন ১৩ বলে ৯ রানে।
দলীয় ৫৮ রানে এন্ডু টাইয়ের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন সাকিব আল হাসানও। সাজঘরে ফেরার আগে ১৭ বলে ২৬ রান করে সাকিব।
দুর্ভাগ্য মাহমুদউল্লাহ রিযাদের। বল ব্যাটে লেগে স্টাম্পে গিয়ে আঘাত হানে। সৌম্য, নাঈম, সাকিবের মতো বোল্ড হয়ে ফেরেন অধিনায়ক।
ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হয়ে ফেরেন মেহেদি হাসান। ১১.২ ওভারে দলীয় ৬৭ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন মেহেদি। তার আগে ২৪ বলে করেন ২৩ রান।
এরপর নুরুল হাসান সোহানকে সঙ্গে নিয়ে ৪৪ বলে ৫৬* রানের অবিচ্ছি জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছেদেন তরুণ ব্যাটসম্যান আফিফ হোসেন। দলের জয়ে ৩১ বলে ৫টি চার ও এক ছক্কায় ৩৭ রান করেন আফিফ হোসেন। ২১ বলে ২২ রান করে অপরাজিত থাকেন সোহান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়া: ২০ ওভারে ১২১/৭ ( মিচেল মার্শ ৪৫, ময়েজেস হেনরিকস ৩০; মোস্তাফিজ ৩/২৩, শরিফুল ২/২৭)।
বাংলাদেশ: ১৮.৪ ওভারে ১২৩/৫ (আফিফ ৩৭*, সাকিব ২৬, মেহেদি ২৩, নুরুল হাসান ২২*)।
ফল: বাংলাদেশ ৫ উইকেটে জয়ী।