মাত্র ১৩ বছর বয়সে যে ঠিকানায় নাম লিখিয়ে দিনে দিনে হয়ে ওঠেন সবার সেরা, ক্লাবের মধ্যমণি, সেই প্রিয় কাম্প নউ মেসি কখনও ছাড়তে পারেন-এমন ভাবনা অনেকের কাছেই ছিল অসম্ভব। কিন্তু ২০২০ সালের অগাস্টে সেই অভাবনীয়কেই সামনে আনেন আর্জেন্টাইন তারকা। বলে দেন, আর নয়।
চুক্তির একটি ধারা কার্যকর করে মেসি ফ্রি ট্রান্সফারে ছাড়তে চেয়েছিলেন বার্সেলোনা। কিন্তু ওই ধারা কার্যকরের সময় পেরিয়ে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, যেতে হলে রিলিজ ক্লজের পুরো অর্থ দিয়েই যেতে হবে। অনেক টানাপোড়েনের পর অনিচ্ছায় থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মেসি।
এরপর নানা জটিলতায় পদ ছাড়তে বাধ্য হন ওই সময়ের ক্লাব সভাপতি জোজেপ মারিয়া বার্তোমেউ। হুয়ান লাপোর্তা ভোটে জিতে দায়িত্ব নিয়েই ঘোষণা দেন, মেসিকে ধরে রাখাই তার মূল এজেন্ডা। কিন্তু দুই পক্ষের আলোচনা ফলপ্রসু না হওয়ায় সময় পেরিয়ে যায়; গত ৩০ জুন ফ্রি এজেন্ট হয়ে যান রেকর্ড ছয়বারের বর্ষসেরা ফুটবলার।
চুক্তি শেষের সময় মেসির ভাবনায় অবশ্য সেসব কিছু ছিল না। তখন যে তিনি ব্যস্ত ছিলেন জাতীয় দলের হয়ে স্বপ্ন পূরণের মিশনে। গত ১০ জুন ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা উৎসব করে আর্জেন্টিনা, জাতীয় দলের হয়ে শিরোপা খরা কাটে ফুটবল মহাতারকার।
এর চার দিন পরই স্পেনের কয়েকটি গণমাধ্যমে খবর আসে, বার্সেলোনার সঙ্গে নতুন চুক্তি করতে রাজি হয়েছেন মেসি। বুধবার রাতে মার্কা, মুন্দো দেপোর্তিভো, স্পোর্তসহ স্পেনের বেশ কয়েকটি পত্রিকা সুত্রের বরাত দিয়ে তাদের প্রতিবেদনে জানায়-আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বার্সেলোনার সঙ্গে মেসির চুক্তি আনুষ্ঠানিক রূপ পাবে।
তবে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেল থেকে হঠাৎ দৃশ্যপট পাল্টাতে শুরু করে। লা লিগার নিয়ম-কানুনের জটিলতায় মেসির চুক্তি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত তাই হলো। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও প্রিয় ক্লাবে আর থাকা হলো না ক্লাবটির ইতিহাসের রেকর্ড শিরোপাজয়ী ও রেকর্ড গোলদাতা মেসির।
লা লিগার দ্বিতীয় সর্বাধিক শিরোপা জয়ী ক্লাবটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডেরও মালিক ৩৪ বছর বয়সী এই তারকা। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৭৭৮ ম্যাচে ৬৭২ গোল করেছেন মেসি।
বার্সেলোনার হয়ে বিদায়ী মৌসুমটা আশানুরূপ কাটেনি মেসির। লা লিগায় মাঝের সময়টা দলের দারুণ কাটলেও শুরু আর শেষের বাজে পারফরম্যান্সে আতলেতিকো মাদ্রিদ ও রিয়াল মাদ্রিদের পেছনে থেকে তৃতীয় হয়ে আসর শেষ করে তারা। দল শিরোপা জিততে না পারলেও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে বেশ উজ্জ্বলই ছিলেন মেসি; টানা পঞ্চম ও রেকর্ড অষ্টমবারের মতো জেতেন পিচিচি ট্রফি।