ডেঙ্গু মোকাবিলায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দ্রুততার সঙ্গে বড় ধরনের কার্যক্রম হাতে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রহুল কবীর রিজভী।
আজ সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।
অন্তর্বর্তী সরকারের বয়স দুই মাসের বেশি হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরে আসবে। নির্বাচিত সরকারই একমাত্র জনগণের জন্য কাজ করতে পারে। যেখানে মানুষের বেঁচে থাকার প্রশ্ন, সেখানে নির্বাচিত সরকার কাজ করতে পারে। বন্যায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ব্যাপক কাজ হয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে যেসব সরঞ্জামাদি কেনা হয়েছিল, তা ছিল অতি নিম্নমানের। করোনার সময়ে আমরা দেখেছি এ ঘটনা। টাকা আত্মসাৎ করেছে ফ্যাসিস্ট সরকার। দেশের হাতেগোনা কয়েকটি হাসপাতালে অক্সিজেন ছিল। মানুষকে অক্সিজেন ও সেবার অভাবে কাতরাতে দেখেছি। মাস্ক থেকে শুরু করে সব সরঞ্জামাদি অত্যন্ত নিম্নমানের ছিল। করোনার সময়ে অনেকের চাকরি চলে গেছে। তাদের পুনর্বাসন নিয়ে ভাবা হয়নি।
তিনি ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফসল বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তো জনবান্ধব। এই সরকারের উচিত ছিল, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।
রুহুল কবির রিজভী ডেঙ্গু একটি পুরনো রোগ উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ বিষয়ে আগাম প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়ার দরকার ছিল। এখনতো ফ্যাসিস্ট সরকার আর ক্ষমতাই নেই। জনসমর্থিত সরকার হয়ে ডেঙ্গুতে জীবনহানি ঠেকাতে সরকার কী-কী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলো!
বেসরকারি উদ্যোগে বিএনপি ফ্যাসিবাদী আমল থেকেই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করে সেবা দিয়ে আসছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রিজভী বলেন, আমরা কয়টা ফ্লাইওভার করলাম, তাতে মানুষের জীবন বাঁচবে না। মানুষের জীবন বাঁচাতে যে সব কাজ করা দরকার আগের স্বৈরশাসক তা করেনি।
বিএনপি গণভিত্তিক একটি দল উল্লেখ করে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, দলের সামর্থ্য অনুযায়ী আমরা ডেঙ্গু প্রতিরোধ কাজ করে যাচ্ছি। ডেঙ্গুর প্রকোপ না কমা পর্যন্ত আজ থেকে আরো বেগবান করা হলো সচেতনতা ও সেবামূলক কার্যক্রম।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে দলের চিকিৎসকরা যেমন ছাত্র আন্দোলনে আহতের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তেমনি আজকে ডেঙ্গু আক্রান্ত নগরবাসীসহ দেশবাসীর পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। এই জন্য সরকারকে বড় উদ্যোগ নিতে হবে। আমরাতো বেসরকারিভাবে কাজ করতে পারি।
রিজভী বলেন, আমরা ইতিমধ্যে ডেঙ্গু মোকাবিলার কাজ শুরু করেছি। আমাদের চিকিৎসকরাও কাজ শুরু করেছেন। বিশেষ করে ঢাকার দুই সিটির জনতার মেয়র ইশরাক হোসাইন ও তাবিথ আওয়াল ডেঙ্গু সচেতনতায় কাজ করছেন। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ব্লাড সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সহায়তায় হট লাইন চালু করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসাইন বলেন, ডেঙ্গু সচেতনতায় দুই সপ্তাহ ধরে আমরা নগরবাসীকে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন লিফলেট বিতরণ করে যাচ্ছি। সেইসঙ্গে এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস করার জন্যও কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট আবদুল সালাম আজাদ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়াল, আমিনুল হক, তানভীর আহমেদ রবিন ও এসএম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।