যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে চলমান আলোচনার মধ্যেই ইসরাইল ভূখণ্ডে তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানোর একটি মাত্র কারণ হচ্ছে হিজবুল্লাহ্রা ইসরাইলকে আর বিশ্বাস করতে পারছিলো না। এ কারণেই রোববার ইসরাইলের দক্ষিণে ও তেল আবিবের একটি নৌ ঘাঁটিতে এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র চালানো হয়েছে। অন্যদিকে বৈরুতে ব্যাপক বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী।
সোমবার ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ আলজাজিরার প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি এএফপি এই খবর জানিয়েছে।
এএফপি জানিয়েছে, রোববার ইসরাইলের বিভিন্ন অঞ্চলে অন্তত ৩শ’ ৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন উৎক্ষেপণ করেছে হিজবুল্লাহ। এসব ঘটনায় অন্তত ১১জন আহত ও অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলেছে, প্রথমবারের মতো তারা ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে আশদোদ নৌঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। পরে সংগঠনটি আবার জানায়, অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে তেল আবিবের একটি ‘সামরিক স্থাপনাতে’ মুহুর্মুহু হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়া তেল আবিবের উপকণ্ঠে গ্লিলট সেনাবাহিনী গোয়েন্দা ঘাঁটিতেও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তারা।
আলজাজিরা বলেছে, হিজবুল্লাহর হামলায় মালোন শহরের একটি কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মেতুলা শহরও ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে জানায় স্থানীয় প্রশাসন।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেল আবিবের উপকণ্ঠসহ উত্তর-পূর্ব ও মধ্য ইসরাইলের একাধিক জায়গায় সাইরেনের শব্দ শোনা গেছে। আকাশপথে হামলা হলে এমন সাইরেন বাজানো হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহর ছোড়া প্রায় আড়াইশ’ ক্ষেপণাস্ত্র লেবানন থেকে ইসরাইল প্রবেশ করেছে। এর আগে রোববারই ১৬০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছিল তারা। ইসরাইলি বাহিনীর দাবি, এর মধ্যে বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র আকাশে থাকতেই ধ্বংস করা হয়েছে।
পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইসরাইলও। লেবাননের সশস্ত্র বাহিনীর স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলার দাবি করেছে তারা। এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের ৫টি এলাকার বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইলি সরকার। লেবাননজুড়ে চালানো এসব হামলায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।
চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি বিবেচনায় লেবাননের শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত বৈরুতে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে।
এদিকে, গাজা ও লেবাননে ইসরাইলি বাহিনী যুদ্ধ চালিয়ে গেলেও সংঘাত বন্ধ চান দেশটির সাধারণ মানুষ। এক জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, ইসরাইলের ৫৪ শতাংশ বাসিন্দা যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরের পক্ষে মতামত দিয়েছেন। আর ২৮ শতাংশ মানুষ যুদ্ধ বন্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছেন।