করোনা সংক্রমণরোধে দফায় দফায় বিধিনিষেধে দেশজুড়ে বন্ধ রয়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। দীর্ঘদিন পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ১১ আগস্ট থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত ও গণপরিবহন সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ শেষের আগেই রাজধানীর চিত্র পাল্টে গেছে।
আজ শনিবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর সড়কগুলোতে অফিসগামী ও বিভিন্ন প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষের চাপ অন্য দিনের তুলনায় বেশি দেখা গেছে। বিধিনিষেধ অনেকেই মানছেন না। মোড়ে মোড়ে মানুষের জট। পথচারীদের চলাচলও বেড়েছে চোখে পড়ার মতো।
গণপরিবহন না থাকলেও প্রধান সড়কগুলো ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল ও রিকশার দখলে রয়েছে। কয়েকটি সিগন্যালে তীব্র যানজটও চোখে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল ৯টার পর থেকে রাজধানীর পান্থপথ, কাওরানবাজার, বাংলামোটর ও শাহবাগের মোড়ে যানজট আর মানুষের চলাচল। অনেকটা স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে পথচারীরা।
রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় একটি ফার্মেসিতে কাজ করেন আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘চলমান লকডাউনে কয়েকদিন রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকলেও গত কয়েকদিন ধরে সেটা আর দেখতে পাচ্ছি না। আমি আজিমপুর থেকে প্রতিদিন ধানমন্ডি যাই, গণপরিবহন না থাকলেও অনেকটা আগের মতোই যানজট এড়িয়ে অফিসে পৌঁছাতে হয়।
অফিসে আনা-নেওয়া করেন সিএনজি চালক আলমিন। সড়কের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি অনলাইনকে বলেন, ‘বিধিনিষেধের মধ্যে কয়েকদিন খালি সড়কে গাড়ি চালিয়েছি। তবে এখন আর শান্তি নেই, আবার রাজধানীতে আগের চিত্র ফিরে এসেছে। আজকে আমার প্রতিটি জায়গায় যানজটে পড়তে হয়েছে। ঠিক সময়ে স্যারদেরকে অফিসে নিয়ে যেতে পারছি না।’
অনেকেই ভাড়ায় মোটরসাইকেলে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। কাওরানবাজারে যানজটে আটকে ছিলো অর্ধশতের মতো মোটরসাইকেল। মোটরসাইকেল আরোহী সাজ্জাত হোসেন বলেন, ‘গাড়ি নেই, কী করবো? মোটরসাইকেল পেলাম, উঠে পড়লাম। সড়কে বাস নেই, তারপরও যানজটে আটকে আছি।’
কেন বের হয়েছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনেই বের হয়েছি। কেউ প্রয়োজন ছাড়া তো আর শখে বের হয় না।’
রাজধানীর কোথাও কোথাও পুলিশের চেকপোস্ট বসিয়ে নজরদারি করলেও অধিকাংশ চেকপোস্টগুলোতেই আজও চোখে পড়ার মতো তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি। ব্যক্তিগত গাড়িগুলোকে খুব একটা থামাতে দেখা যায়নি।
এ প্রসঙ্গে শাহবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক শেখ মো. কামরুজ্জামান (অপারেশন) অনলাইনকে বলেন, ‘বিধিনিষেধ থাকলেও কয়েক দিন ধরে সড়কে গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাই বেশি। তবে আজ ব্যাংক বন্ধ থাকায় সড়কে গাড়ির চাপ কম। সোমবার থেকে আবার সড়কে গাড়ির চাপ বাড়বে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। তবে আমাদের চেক পোস্টগুলোর তৎপরতা আগের মতোই চলছে। গাড়িগুলোকে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসাবাদ করা অব্যাহত রয়েছে।’