আওয়ামী লীগ সরকার ব্যর্থতা ঢাকতে চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমান কবর নিয়ে এখন প্রশ্ন তুলছে বলে দাবি করেছে বিএনপি।
প্রধানমন্ত্রীর এক বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগের অন্য নেতাদের কথার জবাব দিতে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে এই প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “দাফন হয়েছে, লক্ষ লক্ষ লোক জানাজায় শরিক হয়েছে। তৎকালীন সেনা প্রধান এরশাদ (এইচ এম এরশাদ) সাহেব নিজে তার (প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান) বডি ক্যারি করেছেন। ইট ইজ এ ওপেন ক্লিয়ার, ক্রিস্টাল ক্লিয়ার- এর চেয়ে বড় সত্য কিছু আর হতে পারে না।”
ফখরুল বলেন, “আজকে আপনাদেরকে (সাংবাদিক) দিয়ে আমাদের কাছে প্রশ্ন করিয়ে সেই কথাগুলোকে আবার সামনে নিয়ে আসা, এটা হচ্ছে মানুষের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটা প্রচেষ্টা মাত্র।
“মূল জায়গায়টায় আসে না কেন তারা? যে নির্বাচনটা কিভাবে করবেন, আপনি গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে কীভাবে শক্তিশালী করবেন, কীভাবে মানুষের অধিকারগুলো, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবেন- সেই কথাগুলোর তারা (সরকার) উত্তর দেয় না।”
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এক কথাপর জবাবে ফখরুল বলেন, “গতকাল ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, আমি না কি তার কথার উত্তর দিই না।
“উনি কী পত্রিকা পড়েন? তার প্রত্যেকটা কথার উত্তর শুধু না, আমরা সঠিক সত্যকে তুলে ধরি সবসময়। উনি গতকাল বলেছেন, ছবি দেখাতে। কী বলব বলেন এখন? এসব কথার জবাব দিতে গেলে মানহানি মামলা করবেন। সেই ধরনের কথা আমাদের রুচিতে বাঁধে যে ছবি দেখাতে বলেন।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “করোনাতে কী করেছেন, সেটা বলেন। আপনি মানুষের জীবন-জীবিকার জন্য কী করেছেন, সেটা বলেন। আজকে কেন মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হচ্ছে আরেকদিন আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি মানুষ ধনী থেকে ধনী হচ্ছে।”
চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়ার কবর প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এটা সাধারণ মানুষ কখনও ভালোভাবে নেয়নি। জিয়াউর রহমান তো এদেশের মানুষের হৃদয়ের মধ্যে আছেন।
“অযথা উনাকে (জিয়াউর রহমান) নিয়ে টানা, শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবকে টানা –এগুলো আমরা করতে চাই না। উনারা আমাদের সকলের শ্রদ্ধেয় নেতা। তাদের সেই জায়গাতেই রাখা উচিত।
“যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক নেতা তাদের সম্পর্কে এই সমস্ত নোংরা কথা যখন বলা হয়, তখন বোঝা যায়, তারা কতটা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে।”
শুক্রবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় বলে জানান মির্জা ফখরুল।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে দেড় বছর ধরে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন খুলে দিতে জোর দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল।
তিনি বলেন, “দীর্ঘকাল বন্ধের ফলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত চার কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত।
“বিএনপি ইতিপূর্বে স্বাস্থ্য বিধি মেনে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের টিকা প্রদান করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহবান জানিয়েছে। গতকাল স্থায়ী কমিটির বৈঠকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয় ।”
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল বলেন, ““উনার (ওবায়দুল কাদের) কথায় বোঝা যায়, এতদিন করোনার কারণে নয়, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কারণে নয়, আন্দোলনকে ঠেকানোর জন্য তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রেখেছেন।”
আফগানিস্তানের কাবুল বিমানবন্দরে আইএস এর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দাও বিএনপির স্থায়ী কমিটি জানিয়েছে বলে জানান মির্জা ফখরুল।