দলের সেরা তারকা ক্রিস্টিয়ানোর রোনালদোর রেকর্ড গড়া ম্যাচে জয় দিয়ে ২২তম ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ শুরু করলো পর্তুগাল। ম্যাচে এক গোল করে রেকর্ড করেছেন রোনালদো।
এইচ গ্রুপে আজ নিজেদের প্রথম ম্যাচে পর্তুগাল ৩-২ গোলে হারিয়েছে ঘানাকে। এ ম্যাচে একটি গোল করেন রোনালদো। এর মাধ্যমে পাঁচ বিশ্বকাপে গোল করা প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে রেকর্ড গড়লেন রোনালদো।
দোহার ৯৭৪ স্টেডিয়ামে শুরুতেই বল দখলে নিয়ে ঘানার উপর চাপ সৃষ্টির ছক কষে পর্তুগাল। সেই ছক কাজেও লেগে যায়। তবে ১০ম মিনিটেই এগিয়ে যাবার ভালো সুযোগ নষ্ট করেন দলের সেরা তারকা রোনালদো। মাঝমাঠ থেকে বাতাসে ভাসিয়ে ঘানার ডি বক্সে বল উড়িয়ে মারেন ডিফেন্ডার এন্টোনিও সিলভা। বল পেয়ে গোলবারে শট নিলেও তা রুখে দেন ঘানার গোলরক্ষক লরেন্স আতি।
ম্যাচের ৩১ মিনিটে গোলের দেখা পান রোনালদো। তবে সেটি বাতিল হয়ে যায়। ডি বক্সের রোনালদোকে পাস দেন স্ট্রাইকার হুয়াও ফেলিক্স। ঘানার দুই ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে কোনাকুনি শটে বল জালে জড়ান রোনালদো। শট নেয়ার আগে ফাউল করে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে ফেলে দেন রোনালদো। সাথে-সাথে ফাউলের বাঁশি বাজান রেফারি। বাতিল হয়ে যায় রোনালদোর গোল।
কিছুক্ষণ পর প্রথমার্ধের শেষ দিকে ৪২ মিনিটে আবারও গোলের সুযোগ পান রোনালদো। ডিফেন্ডার রাফায়েল গুয়েরেইরোর যোগান দেয়া বল পেয়ে বক্সের বাঁ-দিক দিয়ে বাঁ-পায়ের জোড়ালো শট নেন রোনালদো। কিন্তু দর্ভিাগ্য তার বল বার ঘেষে বাইরে চলে যায়। শেষ ডর্যন্ত পর্তুগালের আধিপত্য ও রোনালদোর মিসে গোলশূন্যভাবে শেষ হয় প্রথমার্ধ। এসময় ৭৪ শতাংশ বল দখলে ছিলো পর্তুগালের। প্রতি পক্ষের বারে ৭বার আক্রমন চালায় রোনালদোর দল। পক্ষান্তরে একবারের জন্যও পর্তুগালের সীমানায় বল নিয়ে আক্রমন করতে পারেনি ঘানা।
প্রথমার্ধে দারুন খেলা পর্তুগাল, দ্বিতীয়ার্ধে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। ৬৫ মিনিটে ডি বক্সের মধ্যে রোনালদোকে ফাউল করেন ঘানার মোহাম্মদ সালিসু। সাথে-সাথে পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন অধিনায়ক সিআর সেভেন।
এর মাধ্যমে বিশ^কাপের ইতিহাসে পাঁচ আসরে গোল করা প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে নাম লেখান রোনালদো।
রোনালদোর রেকর্ড গোলে অবশ্য পর্তুগালের লিড বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৭৩ মিনিটে ম্যাচ সমতা আনে ঘানা। ডান-প্রান্ত দিয়ে মিডফিল্ডার মোহাম্মদ কুদুসের কাছ থেকে বল পেয়ে ডান-পায়ের শটে গোল করেন ঘানার আরেক মিডফিল্ডার আন্দ্রে আইয়ু।
আইয়ুর গোলে সমতা ফিরলেও দ্রুত লিড নিয়ে নেয় পতর্ুূগাল। ৭৮ মিনিটে ডান-প্রান্ত দিয়ে মিডফিল্ডার ব্রুনো ফার্নান্দেসের আক্রমনে বক্স থেকে ডান-পয়ের শটে বলকে ঘানার জালে আশ্রয় নেন ফেলিক্স (২-০)।
২ মিনিট পর ফার্নান্দেসের সহায়তায় পর্তুগালের পক্ষে তৃতীয় গোল করেন স্ট্রাইকার রাফায়েল লিয়াও। ১৫ মিনিটের ব্যবধানে তিন গোল করে ম্যাচ জয়ের পথ তৈরি করে ফেলে পর্তুগাল। এ সময় ৩-১ গোলে এগিয়ে ছিলো পর্তুগীজরা।
তবে ম্যারে অন্তিম মুহূর্তে অর্থাৎ ৮৯ মিনিটে কর্ণার থেকে উড়ে আসা বলে দারুন হেডে বলকে পর্তুগালের জালে জড়ান স্ট্রাইকার ওসমান বুকারি। এতে স্কোর লাইন দাঁড়ায় ৩-২। এই গোলে ম্যাচে উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়। ইনজুরি সময়ে গোল করলেই পর্তুগালের সাথে ড্র’র স্বপ্ন ছিলো ঘানার।
নির্ধারিত সময় শেষ হবার পর ইনজুরি সময়ে ১১ মিনিটের খেলায় পর্তুগালকে চেপে ধরে ঘানা। এ সময় তিনটি আক্রমন করেও গোলের দেখা না পেলে হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে ঘানা। শেষ মুর্হূতে চাপে পড়লেও, পূর্ণ ৩ পয়েন্ট পায় পর্তুগাল।
২০১৪ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ঘানার বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল পর্তুগাল।
আগামী ২৮ নভেম্বর লুসাইলের লুসাইল স্টেডিয়ামে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে উরুগুয়ের মুখোমুখি হবে পর্তুগাল। একই দিন দোহার এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে লড়বে ঘানা।