শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বেগম খালেদা জিয়া’র সাথে প্রধান উপদেষ্টার কুশল বিনিময় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৬০তম জন্মদিন কাটলো নীরবে শিক্ষার্থী-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের নামে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হবে: তারেক রহমান নিত্য পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি : ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরোদবাদক ওস্তাদ আশীষ খাঁ মারা গেছেন শহীদদের নামে হবে দুই শতাধিক স্টেডিয়াম: আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া মানুষের জন্য লাভজনক এমন অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ২০২৫ সাল নাগাদ সরকারি নির্মাণে পোড়া ইট ব্যবহার বন্ধ হবে : সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ -আইন মন্ত্রণালয়ে ১০০ দিনে গৃহীত কার্যক্রম সরকারি আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ব্রাজিলের সেকেন্ড লেডির বৈঠক ফ্যাসিবাদের গাছ কেটেছি, শিকড় উপড়ে ফেলতে প্রয়োজনে আমৃত্যু লড়াই করবো : আসিফ মাহমুদ গণমাধ্যমের ওপর সরকারের কোনো চাপ নেই : নাহিদ ইসলাম আজ উদীয়মান কণ্ঠশিল্পী সালমান রাজের জন্মদিন কপ-২৯ সম্মেলনে যোগ দিতে আজারবাইজান যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা বর্তমান সরকারের বৈধতা হলো গণঅভ্যুত্থান : আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিলেন আরো তিনজন বাতিল নয় স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের প্রক্রিয়া চলছে : টিসিবির মুখপাত্র বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করবে : তারেক রহমান গণতন্ত্র বিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্র থেমে নেই : তারেক রহমান ইসরাইল হামলা করলো লেবাননে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন হলে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা সম্ভব : মির্জা ফখরুল  বিপ্লবের মাধ্যমে ছাত্র-শিক্ষকেরা চিন্তার স্বাধীনতা, মুক্তবুদ্ধির চর্চা ফিরে পেয়েছেন : অধ্যাপক ইউনূস গুম সংক্রান্ত কমিশনে ১,৬০০’র বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে পরিকল্পনা কমিশন গঠন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছয় সংস্কার কমিশন প্রধানের বৈঠক বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি’র নাটকের প্রদর্শনী বন্ধের কারণ জানালেন ডিজি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে ২২ নভেম্বর ঢাকায় আসছে আয়ারল্যান্ড নারী দল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আসিয়ানের সদস্য পদ পেতে ইন্দোনেশিয়ার সমর্থন চান নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে নাম চেয়েছে সার্চ কমিটি

নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিতে জাতিসংঘ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ৫ দফা প্রস্তাব

স্বাধীনতা২৪.কম
  • Update Date : মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্য ও সার রফতানির ওপর থেকে বিধিনিষেধ তুলে নিতে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোর দিয়ে বিশ্বব্যাপী টেকসই, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের ‘খাদ্য ব্যবস্থা’ সম্মেলনে পাঁচ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তিনি আধুনিক কৃষিতে বিনিয়োগের জন্য বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক ও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী এই সম্মেলনে আজ জলবায়ুু ঝুকিপূর্ণ অঞ্চলে জলবায়ুু-সহনশীল খাদ্য জোটকে সক্রিয় করার পাশাপাশি কার্যকর কৃষি-খাদ্য প্রযুক্তির অংশীদারিত্ব জোরদার করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের জলবায়ুু-সহনশীল খাদ্য ব্যবস্থার জন্য জোট সক্রিয় করতে হবে, ২০২১ সালের জাতিসংঘ খাদ্য ব্যবস্থা শীর্ষ সম্মেলনে যার সহ-নেতৃত্ব প্রদানে বাংলাদেশ সম্মত হয়েছিল।” প্রধানমন্ত্রী এখানে এফএও সদর দফতরে জাতিসংঘ খাদ্য ব্যবস্থা সামিট + ২ স্টকটেকিং মোমেন্ট সম্মেলনে “খাদ্য ব্যবস্থা ও জলবায়ু কর্মপন্থা” বিষয়ক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে তার উত্থাপিত পাঁচটি প্রস্তাবের একটিতে এটি উল্লেখ করেছেন।
তিনি প্রস্তাব করেন,“উন্নত দেশগুলিকে জলবায়ুু-অভিযোজিত কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থার প্রতি যথাযথ মনোযোগ দিয়ে জলবায়ুু অর্থায়নের জন্য খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তরকে অগ্রাধিকার হিসাবে বিবেচনা করতে হবে।” এছাড়া অন্য এক প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, “জাতিসংঘ খাদ্য ব্যবস্থা সমন্বয় কেন্দ্রকে গবেষণা ও উদ্ভাবনে আন্তঃশৃঙ্খলা সহযোগিতার মাধ্যমে জ্ঞান-ব্যবস্থাপনা বাড়াতে হবে।”
আর এক প্রস্তাবে তিনি বলেন, “নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে খাদ্য এবং সারের চাহিদার নিরিখে জলবায়ুু-ইতিবাচক সমাধান প্রচারে বেসরকারি খাতকে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত করতে হবে।”
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আরও প্রস্তাব করেছেন যে “ডেল্টা এবং উপকূলীয় অঞ্চলের মতো জলবায়ুু ঝুকিপূর্ণ অঞ্চলে কার্যকর কৃষি-খাদ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব জোরদার করা দরকার।”
আধুনিক কৃষি-খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা বিশ্বব্যাপী গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনের অন্যতম বড় অবদানকারী হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, ব্যবহার এবং সুষ্ঠু বিণ্যাস জলবায়ু-নিরপেক্ষ করতে বিনিয়োগ করা উচিত।” তিনি বলেন,“এর জন্য অবশ্য আমাদের যথেষ্ট রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং আন্তর্জাতিক জনমত প্রয়োজন”।
বাংলাদেশ সম্প্রতি গ্লোবাল মিথেন অঙ্গীকারে যোগদান করেছে  উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা আশা করি, এই উদ্যোগের প্রধান পৃষ্ঠপোষকরা তাদের প্রতিশ্রুত আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে আসবে।” তিনি বলেন, তার সরকার জি২০ প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক বায়ো-ফুয়েল অ্যালায়ন্সের মতো করে উন্নয়নগুলি অনুসরণ করছে। তিনি বলেন,“আমরা আমাদের ক্ষুদ্র চাষীদের দ্বারাও সেচের জন্য সৌর বিদ্যুতের ব্যবহারকে উৎসাহিত করছি। আমাদের কৃষি, কম নির্গমনকারী পশুসম্পদ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য সাশ্রয়ী প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার দরকার।”
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সামুদ্রিক এলাকায় টেকসই গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার জন্য বিদেশী বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান। জলবায়ু সংকটের জন্য একটি টেকসই এবং রূপান্তরিত খাদ্য ব্যবস্থায় কাজ করা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আর বিলম্ব না করে কী করা দরকার, তা আমাদের চিহ্নিত করতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তা এখন জলবায়ু ন্যায় বিচারের সাথে সম্পর্কিত।” বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা, দীর্ঘস্থায়ী খরা, ব্যাপক বন্যা এবং পরিবর্তনশীল বৃষ্টিপাতের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশে আমাদের উপকূলীয় ভূমিতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং লবণাক্ততা অনুপ্রবেশের ফলে ধান উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। নদীভাঙন, নগরায়ণ, শিল্প প্রবৃদ্ধি এবং অন্যান্য কারণের কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর আবাদি জমি হ্রাস পাচ্ছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান “সবুজ বিপ্লবের” ডাক দিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন আবার জলবায়ু-স্মার্ট “কৃষি-খাদ্য বিপ্লবের” সময় এসেছে। কৃষি খাতকে রূপান্তর করতে প্রকৃতি-ইতিবাচক সমাধান এবং উন্নত প্রযুক্তি উভয়ই প্রয়োগ করতে হবে। কৃষি ও খাদ্য উৎপাদনে আমাদের কঠোর অর্জনের ফলে, বাংলাদেশকে অনন্যভাবে বিশ্বব্যাপী এসব বিষয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য স্থান দেওয়া হয়েছে”। তিনি বলেন, “আমি মুগ্ধ যে কপ ২৮-এর মনোনীত প্রেসিডেন্ট এই ইস্যুর চ্যাম্পিয়ন হিসাবে গত সপ্তাহে ব্যক্তিগতভাবে আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।”
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রচেষ্টার কথাও তুলে ধরেন যেখানে এর কৃষি বিজ্ঞানী এবং সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা কৃষকদের সাথে জলবায়ু-সহনশীল কৃষি-খাদ্য সমাধানের উন্নয়নে কাজ করছেন। তিনি বলেন,“আমাদের সরকার আমাদের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বাজেট এবং সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে।” তিনি বলেন, তার সরকারের শাসনামলে গত ১৪ বছরে মোট ৬৯০টি উন্নত ও উচ্চ ফলনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন বা প্রবর্তন করা হয়েছে। চাপ সহনশীল ধানের জাতগুলোর মধ্যে লবণাক্ততা প্রতিরোধী ১৪টি, পানিতে তলিয়ে যাওয়া ছয়টি, খরার প্রতি ১০টি, ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য চারটি এবং সাতটি প্রধান মানের। তিনি বলেন,“আমাদের বিজ্ঞানীরা দীর্ঘায়িত জলাবদ্ধতা এবং খরা প্রতিরোধী ধানের জাত নিয়ে কাজ করছেন। পুষ্টির উন্নতির জন্য, আমরা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ডায়াবেটিক এবং প্রো-ভিটামিন জাত সহ আটটি জিঙ্ক সমৃদ্ধ ধানের জাত প্রবর্তন করেছি।” তিনি উল্লেখ করেন যে, তার সরকার ভাসমান কৃষি, ছাদে কৃষি, রান্নাঘর বাগান, প্রসারে প্রণোদনা ও সহায়তা দিচ্ছে। হাইড্রোপনিক এবং অ্যারো-পনিক কৃষি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী ভাসমান সবজি উৎপাদন পদ্ধতি এখন স্থানীয়ভাবে পরিচালিত জলবায়ু অভিযোজনের অন্যতম সেরা উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়। শেখ বলেন, বাংলাদেশ তার কৃষকদের সহায়তার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করছে। এ লক্ষ্যে তিনি বলেন, তার সরকার সারাদেশে প্রায় ৫০০ কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র স্থাপন করেছে। কৃষকরা একটি নির্দিষ্ট ফোন নম্বরে কল করে প্রাসঙ্গিক তথ্য চাইতে পারেন। ডেডিকেটেড ওয়েবসাইট এবং কমিউনিটি রেডিও কৃষি তথ্য প্রদানকরে। অনলাইনে সার সুপারিশ, সেচ পরিষেবা, কীটনাশক প্রেসক্রিপশন, ক্রপ-জোনিং অ্যাডভাইজরি, রাইস নলেজ ব্যাংক এবং অন্যান্য পরিষেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারি অ্যাপের পাশাপাশি কৃষি-প্রযুক্তি স্টার্ট-আপদের দেওয়া পরিষেবাও তৃণমূলে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১৪ বছরে তাদের বিশেষজ্ঞরা ৬৪২টি নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রবর্তন করেছেন এবং এগুলো শক্তি, পানি, সার, বীজ এবং কীটনাশক ব্যবহারের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করেছে। তিনি বলেন, “আমরা সাব-সাহারান আফ্রিকা এবং অন্যত্র জলবায়ু-চাপযুক্ত সেটিংসের সাথে আমাদের দক্ষতা ভাগ করে নিতে প্রস্তুত আছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তৃতা দেওয়ার সময় এফএও সদর দপ্তরের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশ কক্ষে এবং আরও দুটি হলে বিপুল সংখ্যক শ্রোতা উপস্থিত ছিলেন। অংশগ্রহণকারীরা হাততালি দিয়ে তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন করেন।
সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল, সামোয়া ফিয়ামের প্রধানমন্ত্রী নাওমি মাতাফা এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বক্তৃতা করেন।সূত্রঃ বাসস

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *