লাওতারো মার্টিনেজের গোলে এগিয়ে গেল আর্জেন্টিনা। ১১২ মিনিটের মাথায় ডি বক্সের সামনে থেকে লো সেলসো ফ্লিকে বল বাড়িয়ে দেন ডানদিকে থাকা লাওতারোকে। বল পেয়েই এই ফরোয়ার্ড ঢুকে পড়েন বক্সের মধ্যে। তার সামনে ছিলেন কেবল কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ভার্গাস। তার মাথার উপর দিয়ে জোরালো শট নিয়ে বল জালে জড়ান ইন্টার মিলানের হয়ে খেলা এই তারকা।
অতিরিক্ত সময়ে কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকা-২০২৪ এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আর্জেন্টিনা। এর মধ্য দিয়ে রেকর্ডও গড়লো তারা। কোপা আমেরিকার ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৬টি শিরোপা জয় করলো মেসি-ডি মারিয়ারা। এছাড়া স্পেনের পরে দ্বিতীয় দল হিসেবে পর পর তিনটি মেজর টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতলো আলবিসেলেস্তরা। ২০২১ সালে কোপা আমেরিকা, ২০২২ বিশ্বকাপ ও ২০২৪ কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতলো আর্জেন্টিনা।
এবারের আসরে এটা ছিল লাওতারোর পঞ্চম গোল। সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে তিনি জিতন গোল্ডেন বুট।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধেও গোল পায়নি কেউ। তাতে গোলশূন্যভাবে শেষ হয়েছে ১০৫ মিনিটের খেলা। এই অর্ধে অবশ্য দারুণ গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল আর্জেন্টিনা। নিকো গঞ্জালেসের নেওয়া দারুণ শট ঝাপিয়ে পড়ে ধরে ফেলেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ভার্গাস।
এরপর অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় অংশে আরও ১৫ মিনিটের খেলা হবে। এই সময়ের মধ্যে সমতা না ভাঙলে ম্যাচ গড়াবে টাইব্রেকারে। পেনাল্টি শ্যুটআউটে নির্ধারিত হবে কোপা আমেরিকা-২০২৪ এর চ্যাম্পিয়ন।
ম্যাচের ৯৫ মিনিটে দারুণ একটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল আর্জেন্টিনা। এ সময় রদ্রিগো ডি পল ডি বক্সের মধ্যে নিকোলাস গঞ্জালেসকে বল বাড়িয়ে দেন। তিনি বল পেয়েই দ্রুত শট নেন। কিন্তু কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ভার্গাস দ্রুত বলের লাইনে এসে ঝাপিয়ে পড়ে তালুবন্দি করেন বল। তাতে নিশ্চিত গোলের সুযোগ নসাৎ হয় আর্জেন্টিনার।
আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচটি নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোলের দেখা পায়নি কেউ। যদিও কলম্বিয়া অনেক সুযোগ পেয়েছিল। সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনাও। কিন্তু কেউ-ই পায়নি জালের নাগাল। ফলে ম্যাচ গড়ালো অতিরিক্ত সময়ে।:
শেষ মুহূর্তে গোল পেতে মরিয়া হয়ে খেলছে আর্জেন্টিনা। একের পর এক আক্রমণ মানিয়ে কলম্বিয়ার আক্রমণভাগকে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছে। কিন্তু কাঙ্খিত গোলের দেখা পাচ্ছে না। নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে যোগ করা সময় দেওয়া হয়েছে ৪ মিনিট।
৭৫ মিনিটে বল জালে জড়িয়েছিল আর্জেন্টিনা। মেসির বদলি হিসেবে নামা গঞ্জালেস পেয়েছিলেন জালের নাগাল। কিন্তু অফসাইডের কারণে সেটি বাতিল হয়।
ম্যাচের ৬৬ মিনিটে মাঠ ছাড়েন লিওনেল মেসি। পায়ের সমস্যার কারণে তিনি আর খেলা চালিয়ে যেতে পারেননি। মেসির পরিবর্তে বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছেন নিকো গঞ্জালেস। যিনি আর্জেন্টিনার হয়ে ৩৮ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ৫টি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই উভয় দল বেশ আক্রমণাত্মক খেলছে। তৈরি করছে সুযোগও। কিন্তু গোলের দেখা পাচ্ছে না কেউ।
৪৮ মিনিটে ম্যাক অ্যালিস্টার সুযোগ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু থেকে গোল করতে দেননি কলম্বিয়ার রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা।
এরপর ৫৪ মিনিটে কর্নার থেকে হামেস রদ্রিগেজের উড়িয়ে মারা বলে হেড নিয়েছিলেন কর্ডোবা। কিন্তু সেটি বারের উপর দিয়ে চলে যায়।
৫৮ মিনিটে ডি মারিয়াও গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। এ সময় তার নেওয়া শট দারুণ দক্ষতায় ধরে ফেলেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক কামিলো ভার্গাস।
শাকিরার পারফরম্যান্সের পর দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু:
প্রধমার্ধের বিরতির পর প্রায় ৩৩ মিনিট পারফর্ম করেন কলম্বিয়ান পপ তারকা শাকিরা। তার পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হন মাঠে উপস্থিত ৬৫ হাজার দর্শক। শাকিরার পারফরম্যান্সের পর শুরু হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধের খেলা।
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে প্রথমার্ধে গোল পায়নি আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়ার কেউ। তবে বল দখল ও আক্রমণে আর্জেন্টিনার চেয়ে বেশ এগিয়ে ছিল কলম্বিয়া। প্রথমার্ধে ৫২.২ শতাংশ বলের দখল ছিল কলম্বিয়ার কাছে। তারা শট নিয়েছিল ৮টি। তার মধ্যে ৪টিই ছিল অন টার্গেটে। দিয়াজ, কর্ডোবা, রদ্রিগেজ ও লার্মার নেওয়া শট অল্পের জন্য মিস হয়।
অন্যদিকে আর্জেন্টিনা শট নিয়েছিল মোটে ৩টি। তার মধ্যে মাত্র ১টি ছিল অন টার্গেটে। আলভারেজ ও মেসি চেষ্টা চালিয়েছিলেন গোল করার। আর্জেন্টিনা কর্নার পেয়েছিল ৪টি, কলম্বিয়া ১টি।
ম্যাচের ৪৪ মিনিটের মাথায় কলম্বিয়ার ডি বক্সের সামনে ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। মেসির নেওয়া ফ্রি কিকে মাথা লাগিয়েছিলেন তাগলিয়াফিকো। কিন্তু তার নেওয়া হেড বারের উপর দিয়ে চলে যায়।
তার আগে ৩৩ মিনিটের মাথায় বেশ দূর থেকে কলম্বিয়ার লারমা শট নিয়েছিলেন। সেটি পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়।
২০ মিনিটের মাথায় গোলের দারুণ একটি সুযোগ পেয়েছিলেন লিওনেল মেসি। অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার বাড়িয়ে দেওয়া বলে শট নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেটি কলম্বিয়ার রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের গায়ে লেগে দুর্বল হয় এবং গোলরক্ষক ভার্গাস ধরে ফেলেন।
ফাইনালের প্রথম দশ মিনিটে আর্জেন্টিনার ওপর প্রভাব বিস্তার করে খেলেছে কলম্বিয়া। তারা বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করে। পক্ষান্তরে মাত্র একটি সুযোগ তৈরি করে আলবিসেলেস্তারা।
সপ্তম মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন হামেস রদ্রিগেজ। অ্যাক্রোবেটিক স্টাইলে তার নেওয়া শট বারে লেগে ফিরে আসে।
ষষ্ঠ মিনিটে লুইস দিয়াজ সুযোগ পেয়েছিলেন গোলের। তার নেওয়া নিচু শট আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক মার্টিনেজ ধরে ফেলেন।
ম্যাচের শুরুতেই সুযোগ পেয়েছিলেন জুলিয়ান আলভারেজ। মন্টিয়েলের ক্রস বক্সের মধ্যে পান আলভারেজ। তার নেওয়া শট পোস্টের দূর দিয়ে চলে যায়।
৮৩ মিনিট দেরিতে শুরু হলো কোপা আমেরিকা-২০২৪ এর ফাইনাল। বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় ম্যাচটি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও স্টেডিয়ামের বাইরে তৈরি হওয়া বিশৃঙ্খলার কারণে সেটি তিন দফা পিছিয়ে ১ ঘণ্টা ২৩ মিনিট অর্থাৎ ৮৩ মিনিটে দেরিতে ৭টা ২৩ মিনিটে শুরু হয়।
বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ২৩ মিনিটে শুরু হবে আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার মধ্যকার কোপা আমেরিকার ফাইনাল। ইতোমধ্যে দল দুটির শুরুর একাদশ কেমন হবে সেটা জানা গেছে।
এমিলিয়ানো মার্টিনেজ (গোলরক্ষক), মন্টিয়েল, রোমেরো, লাওতারো মার্টিনেজ, তাগলিয়াফিকো, ডি মারিয়া, ডি পল, এনজো, ম্যাক অ্যালিস্টার, মেসি (অধিনায়ক) ও আলভারেজ।
ফাইনালে আর্জেন্টিনা আজ ৪-৩-৩ ফরম্যাটে খেলছে।
ভার্গাস (গোলরক্ষক), আরিয়াস, সানচেজ, কুয়েস্তা, মোজিকা, রিওস, লার্মা, দিয়াজ, রদ্রিগেজ (অধিনায়ক), জে. আরিয়াস ও কর্ডোবা।
এদিকে কলম্বিয়া আজ ৪-২-৩-১ ফরম্যাটে খেলবে।
কোপা আমেরিকার ফাইনাল শুরু হতে আরও ৩০ মিনিট দেরি হবে। বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে ম্যাচটি।
আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার মধ্যকার ফাইনালটি বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দর্শকদের চাপের কারণে তৈরি হওয়া বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রথমে আধা ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হয় ম্যাচ। অর্থাৎ ৬টা ৩০ মিনিটে শুরু হওয়ার কথা ছিল। এরপর সেটা বাড়ানো হয় আরও ১৫ মিনিট। অর্থাৎ সকাল ৬টা ৪৫ মিনিট। কিন্তু তখনও ম্যাচ শুরু করা যায়নি। তাতে ফাইনালটি আরও ৩০ মিনিট পিছিয়ে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে শুরু হবে বহুল প্রত্যাশিত ফাইনালটি।
দর্শকদের দেওয়া চাপে মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামের দক্ষিণ গেটের নিয়ন্ত্রণ ভেঙে যায়। তাতে অনেক কলম্বিয়ান দর্শক হুড়মুড় করে মাঠে ঢুকে পড়ে। পরিস্থিতি বেসামাল হলে বন্ধ করে দেওয়া হয় গেট। টিকিটধারী দর্শকদের বেছে বেছে ঢোকাতে গিয়ে দেরি হচ্ছে বেশ। লম্বা সময় ধরে দর্শকরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন। উপচে পড়া ভিড়ের কারণে তারা মাঠে প্রবেশ করতে পারছেন না।
এদিকে আগেই আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যারা ফাইনালের টিকিট পাননি তারা যেন মাঠে না আসেন। কিন্তু স্টেডিয়ামের বাইরে টিকিটবিহীন দর্শকদের সংখ্যাও অনেক। টিকিটধারী ও টিকিটবিহীন দর্শকদের উপচে পড়া ভীড় সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন নিরাপত্তারক্ষী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
যারা গেট ভেঙে প্রবেশ করেছেন তাদের অনেককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্টেডিয়ামের বাইরে কোথাও কোথায় দুই দলের দর্শকদের মধ্যে হাতাহাতি এবং মারামারিও ঘটনাও ঘটছে। প্রচণ্ড ভিড় আর প্রবল চাপের কারণে কিছু কিছু দর্শক অসুস্থও হয়ে পড়ছেন। তাদের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ছে। তাতে করে ফাইনাল শুরু হতে আরও ১৫ মিনিট দেরি হচ্ছে। বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে শুরু হবে ম্যাচ।
কোপা আমেরিকার ফাইনাল শুরু হওয়ার আগেই দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। স্টেডিয়ামের বাইরে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়। চাপ সামাল দিতে হিমশিম খায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
একটা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পরাস্ত করে কলম্বিয়ার দর্শকরা ফ্লোরিডার মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামের লোহার গেট ধাক্কা দিয়ে ভেঙে মাঠে প্রবেশ করে। তাদের কাছে ফাইনালের টিকিট আছে কি নেই সেটা নিশ্চিত হতে পারেননি নিরাপত্তারক্ষীরা।
গেট ভেঙে দর্শক মাঠে প্রবেশ করতে শুরু করায় একটা পর্যায়ে সব গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাতে বিপাকে পড়েন অন্যান্য দর্শকরাও। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে মাঠে দর্শক প্রবেশ বন্ধ রয়েছে। তাতে স্টেডিয়ামের বাইরে আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার দর্শদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
আবার কোথাও কোথায় আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার দর্শকরা মারামারি ও হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে নিরাপত্তারক্ষী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গেট ভেঙে মাঠে প্রবেশ করার কারণে কোপা আমেরিকার ফাইনাল শুরু হতে দেরি হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের (বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা) কমপক্ষে আরও ৩০ মিনিট পর শুরু হবে ফাইনাল।
স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে গেট খুলে দেওয়ার কথা ছিল। গেট খুলে দেওয়াও হয়। কিন্তু তর সইছিল না কলম্বিয়ার সমর্থকদের। তারা একটা পর্যায়ে গেট ভেঙে মাঠে প্রবেশ করতে শুরু করে। তাদের রুখতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন নিরাপত্তরক্ষী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বাধ্য হয়ে একটা পর্যায়ে দর্শক প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এরপর আস্তে আস্তে চেক করে দর্শক মাঠে প্রবেশ করানো হয়। পরিস্থিতি বেসামাল হলে দর্শক প্রবেশে বেশ সময় লাগে। সে কারণে খেলা নির্ধারিত সময়ের আধাঘণ্টা পরে শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়। যাতে টিকিট কেটে খেলা দেখতে আসা দর্শকরা ম্যাচের এক মিনিটও মিস না করেন।